জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্বাধীনতাত্তোর দেশ পুনর্গঠন এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে ১ ৯৭৪ সালের ১৯ জুন প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া প্রতিষ্ঠা লাভ করে।পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে প্রণীত আইন দ্বারা পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
একডেমীর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সকাল ৯:০০ টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়ার প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আরডিএ, বগুড়ার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব মো: খুরশীদ ইকবাল রেজভী ও জনাব মোঃ শাহাদাৎ হোসাইন, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও বাজেট), পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।
এসময় একাডেমীর সর্বস্তরের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর মহাপরিচালক মহোদয়ের নের্তৃত্বে একাডেমীর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষণার্থীদের অংশগ্রহণে এক আনন্দ র্যালী করা হয়, র্যালীটি একাডেমী ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে আরডিএ প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শান্তির প্রতীক পায়রা ও উড়ানোর পর সকলকে সাথে নিয়ে মহাপরিচালক কেক কেটে দিবসটি স্মরণীয় করে রাখেন।
পরে অডিটোরিয়ামে আরডিএ, বগুড়ার মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে “স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়ার অর্জন ও সম্ভাবনা” শীর্ষক সেমিনারে সকলে অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও বাজেট) জনাব মোঃ শাহাদাৎ হোসাইন।
একাডেমীর সাবেক ও বর্তমান অনুষদ সদস্য, মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের অতিথিবৃন্দ উক্ত সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোঃ শফিকুর রশিদ, যুগ্ম পরিচালক, আরডিএ, বগুড়া। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একাডেমীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. এম এ মতিন ও সাবেক পরিচালক ড. একেএম জাকারিয়া। আলোচনায় বক্তারা একাডেমীর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি বিভিন্ন কর্মকান্ড, অর্জন, বিভিন্ন ব্যক্তির অবদান নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বগুড়ার বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে একদিকে গ্রামীণ সমস্যাসমূহ যেমন নিরূপণ হচ্ছে তেমনি এর উদ্ভাবিত মডেল গুলোর মাধ্যমে পল্লী উন্নয়ন একাডেমী আজ “সেন্টার অব এক্সিলেন্স” হিসেবে গড়ে উঠেছে।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে মহাপরিচালক আরো বলেন পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়ার কর্মকাণ্ড সামনে আরো বেগবান হবে যা এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সাথে সাথে বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ইতিবাচক সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ২০৪১ সালের “স্মার্ট বাংলাদেশ” বিনির্মাণে সরাসরি অবদান রাখবে। একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ প্রায় অর্ধ শতবর্ষ ধরে প্রশিক্ষণ, গবেষণা, প্রায়োগিক গবেষণা ও পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি পল্লী এলাকায় দারিদ্র্য বিমোচন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে সাফল্যের সাথে কাজ করে যাচ্ছে পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া।
বাদ যোহর একাডেমি জামে মসজিদে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এরপর সকলের অংশগ্রহণে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির পর সকল আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে স্মৃতিচারণ ও একাডেমি পরিদর্শন করা হয়। পরে সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনব্যাপী এ কার্যক্রমের সমাপ্তি হয়।