Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৯ জানুয়ারি ২০২০

“আমার গ্রাম-আমার শহর” বিনির্মাণে পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া কর্তৃক বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মশালা সিরডাপ মিলনায়তন, ঢাকায় অনুষ্ঠিত


প্রকাশন তারিখ : 2020-01-27

 

“আমার গ্রাম-আমার শহর” বিনির্মাণে পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া কর্তৃক পরিচালিত গবেষণার ফলাফল সমৃদ্ধকরণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত জাতীয় কর্মশালা সিরডাপ মিলনায়তন, ঢাকায় ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মানিত মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য পাবে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার। আমার গ্রাম-আমার শহর বিষয়ে আরডিএ, বগুড়া গবেষণা করে যে ফলাফল প্রদান করেছে সেটি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের করনীয় নির্ধারণ করবে”।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সম্মানিত সচিব জনাব মোঃ রেজাউল আহসান এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একই বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ আফজাল হোসেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ জয়নুল বারী, সচিব, সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়, জনাব মোঃ নুরুল আমিন, সচিব, পরিকল্পনা বিভাগ ও জনাব মোঃ নুর-উপ-রহমান, সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
কর্মশালাটিতে “আমার গ্রাম-আমার শহর” গবেষণায় প্রাপ্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে করণীয় বিষয় সম্পর্কে উপস্থাপনা প্রদান করেন পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ), বগুড়া’র মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার আমার গ্রাম-আমার শহর এর যে স্বপ্ন দেখছেন সেই স্বপ্নের গ্রাম বিনির্মাণে এবং সরকারের ২০২১ ও ২০৪১ এর রূপকল্পে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করার যে প্রয়াস ব্যক্ত করেছেন সেখানে গ্রামগুলোতে নগর সুবিধার প্রসার বাড়ানো সম্ভব হলে বদলে যেতে পারে গ্রামীণ জনগণের জীবনচিত্র, দূর হতে পারে দারিদ্র, জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বাংলাদেশ পৌঁছে যেতে পারে কাংখিত উন্নত দেশে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নীতি ও আদর্শকে ধারণ করে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ শীর্ষক নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ তে “আমার গ্রাম-আমার শহর” শীর্ষক একটি বহুমাত্রিক গ্রাম উন্নয়ন ধারণা প্রবর্তন করেন। প্রকৃতপক্ষে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে গ্রামের প্রাকৃতিক অবয়বকে অক্ষুন্ন রেখে নগরের মৌলিক সুবিধা সমূহ গ্রামে সম্প্রসারণের মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের পার্থক্য কমিয়ে আনাই এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
গ্রাম উন্নয়ন সম্পর্কিত জাতীয় প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ), বগুড়া এর ম্যান্ডেট অনুযায়ী আরডিএ’র মহাপরিচালক যোগদান করার পর বিষয়টি গুরুত্ব অনুধাবন করে “আমার গ্রাম-আমার শহর” বিনির্মাণে সরকারকে নীতি নির্ধারণী সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে ১৭টি দলে ৩৮ জন গবেষকের মাধ্যমে জাতি গঠনমূলক ১৭টি বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়ন করে। গবেষণা এলাকা হিসেবে আরডিএ’র সন্নিকটে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার চকপাথালিয়া গ্রামকে নির্বাচন করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন ও সরকারি দলিল থেকেও তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে। গবেষণাটির গুনগতমান উন্নয়নে মহাপরিচালকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে অনুষদ পর্যায়ে একাধিক কর্মশালা, গ্রাম পর্যায়ে জন প্রত্যাশা নিরূপণ এবং জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিকট গবেষণা প্রতিবেদন রিভিউ করার জন্য প্রেরণ করে তথ্য যাচাই করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনটির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গ্রামকে কিভাবে শহরে রূপান্তর করা যায়/কিভাবে শহরের সুযোগ সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেয়া যায় তার একটি ধারণাপত্র প্রণয়ন করা হয়। ধারণাপত্রটিতে “আমার গ্রাম-আমার শহর” বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী শহরের সুবিধার সাথে বাস্তবিক অর্থেই গ্রামে যে সকল সেবা প্রদান প্রয়োজন তা অন্তভূক্ত করে নিজস্ব কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয় সমূহ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। “আমার গ্রাম-আমার শহর” বাস্তবায়িত হলে দেশের সার্বিক উন্নয়ণে গৃহীত সরকারের ভিশন-২০২১, এসডিজি, ভিশন-২০৪১, নির্বাচনী ইশতেহার, সপ্তম-পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা এবং ডেল্টাপ্লান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে এবং বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। যেহেতু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম সমন্বয় করে থাকে সেহেতু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভবিষ্যতে “আমার গ্রাম-আমার শহর” কর্মসূচী বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-কে সম্পৃক্ত করে তৃণমূল পর্যায়ে কাংখিত উন্নয়ন সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা, গ্রামীণ নিরাপদ পানি ব্যবস্থা, গ্রামীণ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, গ্রামীণ তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, গ্রামীণ বাসস্থান, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থা, গ্রামীণ স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা, গ্রামীণ জনগোষ্ঠির আর্থিক সেবা খাতে অর্ন্তভূক্তি, গ্রামীণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক পরিষেবা, গ্রামীণ উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান, গ্রামীণ বাজার ব্যবস্থা, গ্রামীণ নিরাপত্তা ও বিচার ব্যবস্থা, গ্রামীণ সামাজিক নিরাপত্তা, গ্রামীণ দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা, গ্রামীণ শিশু ও নারী উন্নয়ন, গ্রামীণ মানব সম্পদ উন্নয়ন, গ্রামীণ যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন বিষয়ে গবেষণা করা হয়। গবেষণাটি গুণবাচক পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হয়েছে এবং গবেষণার তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশ্ব উন্নয়ন সূচক অনুসারে বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজকে বিশ্লেষণ করার জন্য ১৭টি সেক্টরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
কর্মশালায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৭০ জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ এবং আরডিএ, বগুড়ার অনুষদ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময়ে আরডিএ কর্তৃক নির্মিত “আমার গ্রাম-আমার শহর” শীর্ষক দৃষ্টিনন্দন ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি ভিডিও এ্যানিমেশন প্রদর্শন করা হয়।