বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠির প্রায় ৫ ভাগ চরাঞ্চলে বসবাস করে। প্রতি বছর বন্যা ও নদী ভাঙ্গনসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে বহু লোকের ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। নদী বেষ্টিত এই সকল চরাঞ্চল মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন ও প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে জীবন জীবিকার অত্যন্ত ঝুঁকি প্রবণ। পাশাপাশি নদী বির্ধৌত উর্বর জমি থাকলেও উন্নত প্রযুক্তি, কলাকৌশল, প্রশিক্ষণ ও উৎপাদন উপকরণ সহজলভ্য না হওয়ায় কাংখিত উৎপাদন ব্যবহত হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারেরই গবাদিপশু পালনের মানসিকতা থাকলেও অর্থাভাব, উন্নত জাত, চিকিৎসা সুবিধা না থাকা, প্রাকৃতিক দুর্যগকালীন গো-খাদ্যের আভাব সম্ভাবনাময় এ খাতটির উন্নয়ন ব্যবহত হচ্ছে । ইতোপর্বে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আওতাধীন ডিএফআইডি’র অর্থায়নে সিএলপি’র মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন চর এলাকায় নানাবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হলেও সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলায় সিএলপির কার্যক্রম ছিল সীমিত । এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে জিওবি'র অর্থায়নে মোট টাকা ৩০৫৫.৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিন বছর (জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত) মেয়াদী প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
সারিয়াকান্দি, সোনালাতলা উপজেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা:
প্রকল্প এলাকা
|
:
|
বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি এবং সোনাতলা উপজেলার (সারিয়াকান্দি উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন এবং সোনাতলা উপজেলার ২ টি ইউনিয়ন) মোট ৮টি (চর) ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
|
প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য:
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার চরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যাবলী নিম্নরূপঃ
(ক) চরের হতদরিদ্র অধিবাসীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পারিবারিক আয়বৃদ্ধি এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, সম্পত্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে দারিদ্র হতে উন্নয়ন;
(খ) বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে মূল ভূ-খন্ডের সাথে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধি;
(গ) দরিদ্র হতে উন্নীত জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে (কৃষি ও অকৃষি) নিয়োজিত করে উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে আরো উন্নত জীবন যাপনের সুযোগ সৃষ্টি করা;
(ঘ) গবাদিপশুর জাত উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সেবা প্রদানকারী (LSP) এবং আইসিটির ভিত্তিক গবাদিপশু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; এবং
(ঙ) বিভিন্ন আয়-বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং Incentive based micro saving program পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি করে কৃষি ও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন।
প্রকল্পের সুবিধাভোগী
প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ২টি উপজেলার চর এলাকায় বেজলাইন সার্ভে পরিচালনা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শ সর্বোপরি সিএলপি’র অভিজ্ঞতার আলোকে প্রকল্পের সুফলভোগী নির্বাচন করা হবে। তবে সুফলভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে বাস্তবায়িত সিএলপি প্রকল্প থেকে বাদ পরা হতদরিদ্রদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় চরাঞ্চলের ১৬০০০ জন জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রকল্পের সুফল পাবে। এদের মধ্যে ৩০০০ জন হতদরিদ্র (সিএলপি প্রকল্প থেকে বাদ পরা) এবং ৫০০০ জন দরিদ্র অর্থাৎ হতদরিদ্র হতে উন্নীত জনগোষ্ঠী।
প্রকল্পের মূল কমর্কান্ড:
- নির্বাচিত ৩২২০ জন সুফলভোগী সদস্য বিভিন্ন আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ডের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজ নিজ এলাকায় প্রশিক্ষণের লব্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সৃষ্টির মাধ্যমে বাড়তি আয় নিশ্চিত করবে।
- ৩ হাজার হতদরিদ্রদের মাঝে গবাদিপশু (৩ হাজারটি গরু ও ৩ হাজারটি ছাগল/ভেড়া) হস্তান্তর করে হস্তান্তরি প্রাণী পালনের জন্য অনুদান (স্ট্যাইপেন্ড) সুবিধা প্রদান, পশুখাদ্য সরবরাহ ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে সম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র নিরসন করা হবে।
- প্রকল্প মেয়াদে মোট ৭০০টি পরিবার শুধুমাত্র গরু মোটাতাজাকরণ কর্মকান্ড পরিচালনা করে সাবলম্বী হবে।
- তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর লাইভস্টক ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমের আওতায় স্থানীয়ভাবে ৩০ জন LSP সৃষ্টির মাধ্যমে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য সেবা, কৃত্রিম প্রজনন ও পালন সেবা নিশ্চিত করা হবে।
- ৩০০ পরিবারের জন্য ৩০০টি নলকূপ, ১২০০ পরিবারের জন্য ৪টি এলাকায় রুরাল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই এবং ১৫০০ পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাকট্রিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
- প্রত্যক্ষ সুফলভোগীদের মধ্য থেকে ১১০০ জন নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে ফলে নারী ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পাবে।
- মোট ৩ হাজার জন সদস্য নিয়ে গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সংস্থা (VSLA) এবং সামাজিক উন্নয়ন দল (SDG) গঠন করে মূলধন/পুজিঁর যোগান নিশ্চিত করে প্রকল্প খাত থেকে ৫০% টাকা প্রদানের মাধ্যমে তহবিল গঠন করে প্রকল্প এলাকার সুফলভোগীদের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে কৃষিভিত্তিক সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
- কৃষকদের চাহিদা মোতাবেক নতুন সম্ভাবনাময় ফসলের উৎপাদন প্রযুক্তির প্রদর্শনী ব্লক তৈরীর মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি।
- স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র পরিসরে প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় কৃষি ও বাসস্থানের ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসন ও জরুরী সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করে দূর্যোগ মোকাবিলা করা।
- দুই উপজেলায় ৮টি দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ ইউনিট স্থাপন ও সেলস্ ও সার্ভিস সেন্টার গঠনের মাধ্যমে পণ্যের বাজার ব্যবস্থা উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
- প্রকল্প এলাকায় ৩২টি স্যাটেলাইট ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি করা।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কৌশলঃ
বগুড়া জেলার সারিয়াকন্দি ও সোনাতলা উপজেলায় প্রায় ১৩,৫০০ পরিবার দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে। প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ২টি উপজেলার চর এলাকায় বেজলাইন সার্ভে পরিচালনা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শ সর্বোপরি সিএলপি’র অভিজ্ঞতার আলোকে প্রকল্পের সুফলভোগী নির্বাচন করা হবে। সুফলভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে বাস্তবায়িত সিএলপি প্রকল্প থেকে বাদ পরা হতদরিদ্রদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এছাড়া চরে কমপক্ষে ৬ মাস বসবাস করতে হবে, যাদের বাস্তভিটা ছাড়া কৃষি জমি নেই অথবা অন্যের জমি ও গবাদিপশু বর্গা নিয়ে অতি কষ্টে জীবিকা নির্বাহ হরে এবং গবাদিপশু লালনপালনের ইচ্ছা থাকলেও ক্রয়ের সামর্থ নেই এবং তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার টাকার বেশী হবে না এ ধরনের মোট ৩ হাজার পরিবার হত দরিদ্র হিসেবে বিবেচিত হবে এবং প্রকল্পের সম্পদ হস্তান্তর কার্যক্রমের (গাদিপশু পালন) সুফলভোগী হিসেবে নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিত হতদরিদ্রদের মধ্যে প্রকল্পের কর্মকান্ড নিম্নবর্ণিত পন্হায় বাস্তবায়ন করা হবেঃ
- নির্বাচিত ৩২২০ জন সুফলভোগী সদস্যকে প্রকল্প মেয়াদে একাডেমী কর্তৃক বিভিন্ন আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ডের উপর বিভিন্ন মেয়াদে প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এছাড়াও প্রকল্প এলাকায় ৯০০০ জন চরের অধিবাসী নারী-পুরুষকে সামাজিক, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসহ দূর্যোগ মোকাবিলায় সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
- প্রকল্পের সম্পদ হস্তান্তর কার্যক্রমের আওতায় নির্বাচিত ৩ হাজার হত দরিদ্র পরিবারের মাঝে গবাদিপশু হস্তান্তর করা হবে। গবাদিপশু ক্রয়ের জন্য একটি পৃথক কমিটি’র মাধ্যমে ক্রয় কার্য সম্পন্ন করা হবে। যেখানে একজন প্রকল্প প্রতিনিধি, SDG এর সভাপতি, সংশ্লিষ্ট LSP ও সুবিধাভোগী/প্রতিনিধি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মনোনীত একজন প্রতিনিধি ক্রয় কমিটির সদস্য থাকবেন। সম্পদ হস্তান্তর পরবর্তী প্রতি পরিবার ১৮ মাস পরিবারের অত্যাবশকীয় ব্যয় নির্বাহে ৫০০/- টাকা হারে স্ট্যাইপেন্ড সুবিধা পাবে। ৬ মাস ৪০০/- টাকা হারে (গবাদিপশু লালন-পালনের জন্য) এবং এককালীন গবাদিপশু চিকিৎসা ও প্রজননক্ষম করতে ৪৫০/- টাকা স্ট্যাইপেন্ড সুবিধা পাবে। এছাড়াও ১ হাজার গাভীর কৃত্রিম প্রজনন ও উন্নত গো-খাদ্যের জন্য বছরে দুইবার যথাক্রমে ৪০০/- টাকা এবং ৬০০/- টাকা হারে প্রতি পরিবারকে স্ট্যাইপেন প্রদান করা হবে। এছাড়াও এ কার্যক্রমকে লাভজনক করতে প্রকল্প থেকে ২ উপজেলায় মোট ৩০ জন LSP (লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার) সৃষ্টি করা হবে। এ সকল LSP সদস্যরা তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর লাইভস্টক ম্যানেজমেন্ট চিকিৎসা সেবা ও গবাদিপশুর কৃত্রিম প্রজনন ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি প্রকল্প এলাকায় সার্বক্ষণিক অবস্থানের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে।
- একাডেমীর গবেষণাকৃত তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর (ICT based) গবাদিপশু ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি প্রকল্প এলাকায় সম্প্রসারণ করা হবে। এ কার্যক্রমের আওতায় প্রকল্প এলাকার গরুর ডাটাবেজ (জন্ম পরিচয়সহ) LSP সদস্যদের মাধ্যমে প্রণয়ন করে একাডেমীর সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। চর এলাকায় অবস্থাকৃত LSP সদস্য কর্তৃক স্মার্টফোনের মাধ্যমে (বিশেষ অ্যাপস ব্যবহার করে) চরের গরুর বর্তমান, অবস্থা, রোগব্যাধী, প্রজনন ইত্যাদি তথ্যাদি আদান প্রদানের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ব্যবস্থাপত্র প্রদান করে দূর্গম চরাঞ্চলে ক্যাটেল ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এছাড়াও একাডেমীর ক্যাটেল গবেষণা কেন্দ্রর মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন, প্রজনন ও আইসিটি বেজ লাইস্টক ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমগুলি নিবিড় তদারকি ও মনিটরিং এর মাধ্যমে চরাঞ্চলে গবাদিপশুর সংখ্যা বৃদ্ধি সম্ভব হবে এবং কর্মসংস্থান ও সম্পদ সৃষ্টি এবং পরিবারিক আয় বৃদ্ধি পাবে।
- M4C প্রকল্পের অভিজ্ঞতার আলোকে চর এলাকার সম্ভবনাময় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে প্রযুক্তি প্রদর্শন, ফসলের মাঠ প্রদর্শনী, স্থানীয় পর্যায়ে উন্নতমানের উৎপাদন উপকরণ সহজলভ্যকরণ সর্বোপরি বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সাথে আন্তসংযোগ গড়ে তুলে ৮টি এলাকায় Sales and Service Center (SSC) কেন্দ্র করে দুগ্ধসহ উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও উপকরণ, balk volume এ ক্রয় ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
- গঠিত সামাজিক উন্নয়ন দল (SDG) প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে (প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায়) পরিচালিত হবে। প্রয়োজনে সামাজিক দল গঠনসহ প্রকল্পের অন্যান্য সমাজিক কর্মকান্ড যেমন- স্যাটেলাইট ক্লিনিক, সামাজিক বনায়ন ইত্যাদি কার্যক্রম স্থানীয় অভিজ্ঞ এনজিও’র তত্ত্বাবধানে ও বাস্তবায়নকারী সংস্থার সরাসরি নির্দেশনায় পরিচালিত হবে।
- ৩২টি স্যাটেলাইট ক্লিনিক স্থাপন করে চরবাসীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা, পুষ্টি, জন্মনিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয়ে নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রকল্প মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে।
মোট ৩ হাজার জন সদস্য (অন্য কোন ঋণদান সমিতির সদস্য নয়) নিয়ে গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সংস্থা (VSLA) গঠিত হবে। প্রতি সদস্য সপ্তাহে ২০.০০ টাকা হারে সঞ্চয় জমা করবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৫-১০ জন সদস্যের সমন্বয়ে একটি উপ-দল গঠন করা হবে। প্রতিটি উপ-দলে একজন দলনেতা থাকবে। সদস্যরা সপ্তাহে একদিন সঞ্চয় জমা সংক্রান্ত সভায় মিলিত হবে এছাড়াও নিজেদের সমস্যা ও ঋণ গ্রহণ, বিতরণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনার জন্য মাসে দুইবার (১৫ দিন পর পর) সভায় মিলিত হবে। প্রতিটি সমিতিতে তিন তালা বিশিষ্ট একটি সঞ্চয় বাক্স থাকবে, তালাগুলির তিন সেট চাবী পৃথক তিনজন সদস্যের কাছে সংরক্ষিত থাকবে। সঞ্চয় ও ঋণের সমূদয় টাকা সম্বলিত বাক্সটি অপর আর একজন সদস্যের নিকট সংরক্ষিত থাকবে। এ সমতির কর্মকান্ড প্রকল্পের মাঠ সহকারী নিবিড় তদারকী করবেন। তাছড়াও সিএলপি অভিজ্ঞতাও এ সমিতিতে প্রয়োগ করা হবে। প্রতিটি সদস্যের মাসিক সঞ্চয়ের উপর প্রকল্প থেকে ৫০% প্রণোদনা প্রদান করা হবে। ফলে সমিতির পর্যাপ্ত পুঁজি গঠনের মাধ্যমে সমিতিগুলো টেকসই হিসেবে গড়ে উঠবে। প্রকল্প মেয়াদকালীন এবং প্রকল্প সমাপনান্তে উক্ত তহবিল হতে সমিতির সদস্যবৃন্দ এবং উদ্যোক্তাগণ প্রয়োজন মত ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। ঋণ কার্যক্রমের সুদের হার সরকার ঘোষিত সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে ঋণ কার্যক্রম একাডেমী’র সিডিআরসি’র প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বিদ্যমান আরডিএ ক্রেডিট এর নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
- প্রকল্পের আওতায় সারিয়াকান্দি উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ৫৪টি ওয়ার্ড এবং সোনাতলা উপজেলার ২টি ইউনিয়নের ১২টি ওয়ার্ড সার্ভে করা হয়েছে।
- প্রকল্পের অর্থায়নে আইসিটি ভিত্তিক গবাদিপশু পালন কৃত্রিম প্রজনন সম্পর্কিত ৩০ জন খঝচ কে, সামাজিক সচেতনতা বিষয়ে ২১৬০ জনকে, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা বিষয়ে ৬০০ জনকে, স্বাস্থ্য,পুষ্টি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে ৬০০ জনকে, চর এলাকায় ফসল উৎপাদন বিষয়ে ৫১০ জনকে, বসতভিটায় সব্জি চায় বিষয়ে ১৮০ জনকে, গরু মোটাতাজাকরণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে ২৭০ জনকে, ৬০ জন উপকারভোগীকে বীজ ব্যবসার মাধ্যমে উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, গো-খাদ্য ও সাইলেজ তৈরী প্রশিক্ষণে ৩০০ জনকে,বনায়ন প্রশিক্ষণে ৩০০ জনকে, প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে ২০ জনকে, বাজার উন্নয়ন ও ব্যবসার পরিকল্পনা প্রশিক্ষণ বিষয়ে ৩৯ জনকে এবং ১৫০ জন উপকারভোগীকে হস্তশিল্প ও সেলাই বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
- প্রকল্পের আওতায় ১১টি মটর সাইকেল ক্রয় করা হয়েছে।
- বনায়ন কার্যক্রমের আওতায় বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে।
- উপকারভোগী ৩১৮৮ জন সদস্যদের মাঝে ষ্টাইপেন্ড সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
- গরু মোটতাজাকরণ ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি কাজে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
- সম্পদ হস্তান্তরের আওতায় উপকারভোগী সদস্যদের মাঝে ১৫৯২টি গরু ও ১৫৯৬টি ছাগল বিতরণ করা হয়েছে।
- প্রকল্পের আওতায় ৩০০টি নলকুপ,পানি সরবরাহ ও আনুসাঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়েছে।
- কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমে ৪৩৫টি গরুকে কৃত্রিম প্রজনন করা হয়েছে।
- ৫টি সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি
- সরবরাহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
- ৬৩০ জন উপকারভোগী সদস্যের মাঝে পাকচং-১ ঘাসের কাটিং বিতরণ করা হয়েছে।